(এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ) : রাজশাহীতে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রেমিককে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যেই প্রেমিকাসহ দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে গ্রেপ্তার দুই নারীকে হত্যা মামলায় আদালতে চালান দিয়ে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করে পুলিশ। এর আগে বুধবার দুপুরে তাদের গ্রেপ্তারের পর প্রেমিক রশিদুল মণ্ডলের (২৪) লাশ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার সায়েরগাছার গ্রামের একরামুল ইসলাম ভাদুর মেয়ে মেরিনা খাতুন (২১) ও ঈশা হকের মেয়ে নেশা খাতুন (২২)। তারা দুজন বান্ধবী এবং বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন।
অপরদিকে, নিহত রাশিদুল মণ্ডল নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর থানার পয়লান গ্রামের জহির মণ্ডলের ছেলে। রশিদুল পেশায় রাজমিস্ত্রি। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে রশিদুল ওই এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে আসছিলেন।
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রথমে মেরিনাকে আটক করে। পরে মেরিনার দেয়া তথ্যমতে বাড়ির ছাদের স্টোর রুম থেকে রশিদুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরপর লাশ গুমে সহযোগিতা করায় নিজ বাড়ি থেকে নেশা খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি আরও জানান, বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত প্রেমিক রশিদুলের পিতা জহির মন্ডল বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সেচ্ছায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
পুলিশ জানান, সায়েরগাছার বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে কাজের সুবাদে প্রায় এক বছর আগে মেরিনা খাতুনের সাথে রশিদুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। মেরিনা খাতুন বুলবুল আহম্মেদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে বুলবুলের বাড়িতে রশিদুলকে ডেকে নিয়ে যায় মেরিনা। সেখানে মেরিনা রশিদুলকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়।
রশিদুল পরিবারের সাথে কথা বলে পরে জানাবে বলেন। এ সময় মেরিনা তাকে রাতেই বিয়ে করার জন্য জোর-জবরদস্তি করেন। এক পর্যায়ে রাত ১১টার দিকে রশিদুল সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে মেরিনা বাঁধা দেয়।
এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মেরিনা ধাক্কা দিয়ে রশিদুলকে ফেলে দেয়। এরপর শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন। বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে উঠার আগেই ভোর রাতে মেরিনা তার বান্ধবী নেশা খাতুনকে ডেকে নিয়ে আসেন।
এরপর দুইজনে লাশ বাড়ির ছাদের স্টোর রুমে নিয়ে রাখেন।